Hsrf_logo

HSRF – Homoeopathy Study And Research Foundation

গত ২৪ তারিখ খুলনায় বেয়াই বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকা থেকে রওনা হই। বাসা থেকে বের হয়েই শুনতে পেলাম, মাওয়া ঘাটের ফেরী বন্ধ। যার দরূন বিকল্প রাস্তা হিসেবে আরিচা’র পথ ধরি। আরিচা ঘাট পার হয়ে ভাঙা যাওয়ার পূর্বে খুলনা মহাসড়কে উঠার জন্য আড়াআড়ি ভাবে একটি চিকন সরু রাস্তায় ঢুকলাম। পথিমধ্যেই যোহরের আজান হয়ে গেছে। সেই সরু রাস্তা কিছুটা এগোনোর পর দেখি সামনে বাজার আর সেই বাজারের মুখেই মসজিদ। মসজিদ দেখে নামাজ আদারের উদ্দেশ্যে গাড়ি থামালাম।

নামাজ শেষে মসজিদের মাঠে বড় একটি বিচার শালিস বসেছে। মসজিদের খাদেম রহিম ভাইকে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘এখানে কিসের বিচার বসেছে?’
তিনি বললেন, ‘এই এলাকার একটি ছেলে তার আপন শালীকে বিয়ে করেছে।’
আমি বললাম, ‘শালীকে বিয়ে করা তো দোষনীয় কিছু নয়। কারণ, আমাদের বাড়ির পাশের এক ভাইও তার নিজ শালীকে বিয়ে করেছে।’
আমার কথা শুনে রহিম ভাই তখন জানতে চাইলেন, ‘ঐ ব্যক্তি কী তার স্ত্রীর মৃত্যু বা তালাক দেওয়ার পর তার শালীকে বিয়ে করেছে?’
আমি বললাম, ‘তার স্ত্রীর মৃত্যুর পর।’
এই কথা শুনে তিনি বললেন, ‘এতে দোষের কিছু নাই। তবে যে ছেলেটির বিচার হচ্ছে তার স্ত্রী তার ঘরেই আছে, তার সাথেই সংসার করছে। এরই মধ্যে সে তার কলেজ পড়ুয়া আপন শালীকে চুপিসারে বিয়ে করে ফেলেছে।’
তখন আমি পুনরায় তাকে প্রশ্ন করলাম, ‘এই ক্ষেত্রে শরীয়তের নিয়ম কী?
প্রতিত্তোরে খাদেম রহিম ভাই বললেন, যে কেউই আপন শালীকে বিয়ে করতে পারবে, তবে তার স্ত্রীর মৃত্যুর পর অথবা স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার পর, তার আগে নয়।’
খাদেমে’র কথা শুনার পর, গাড়িতে উঠে পুনরায় খুলনার পথে রওনা হলাম আর ‘অর্গানন অব মেডিসিন ‘ বইটি পড়ছিলাম। যখন অর্গাননের ২৭৩ নং সূত্র পড়ছিলাম তখন পথিমধ্যে আমার মনে হলো, শালীর বিয়ের বিচারের সঙ্গে এই সূত্রটির একটি মিল রয়েছে।

এই সূত্রে বলা হয়েছে, একবারে একটির বেশি ওষুধ কোন রোগীকে দেয়া যাবে না। প্রয়োজন হলে একটির পর আর একটি অর্থাৎ পর্যায়ক্রমিক ভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে।
যেমন: Calc.carb, Lycopodium, Sulphur ইত্যাদি।

এই নিয়মটা যেন একেবারেই নিজ শালীকে বৈধভাবে বিয়ে করার মতো। যেমনি করে এক রোগীকে একসাথে দুটি ওষুধ দেয়া যায় না। তেমনি করে স্ত্রীর মৃত্যু কিংবা তালাক দেয়ার পূর্বে শালীকে বিয়ে করা যায় না। স্ত্রীর মৃত্যু কিংবা তালাক প্রাপ্ত হওয়ার পর যেমনি শালীকে বিয়ে করা বৈধ, তেমনি পর্যায়ক্রমিক ভাবে প্রয়োজনে দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে একটির পর আর একটি ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে একই সঙ্গে দুটি নয়।

মূলকথা: একই সঙ্গে একজন রোগীকে মাত্র একটি ওষধ প্রয়োগ করতে হবে। কখনই দুটি নয়, প্রয়োজনে পর্যায়ক্রমে দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে একটির পর আর একটি ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে।

লেখক- ডা. ফারুকী
০১৭১১০৩৯২৩৯